• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৩০ নভেম্বর, ২০২১ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

হাসান রাসেলের গ্রাম নিয়ে সফলতার স্বপ্ন

খন্দকার মোঃ তারেক

হাসান রাসেলের গ্রাম নিয়ে সফলতার স্বপ্নঃ এটাতো একদমই পরিষ্কার যে আমি আমার একটি ‘ব্রাইট ফিউচার’ পেলে এখানে এসেছি ছোট্ট শিশুদের নিয়ে কাজ করতে। সাইফুর’স-এর মতো দেশের একটি স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠান রেখে আমি গ্রামে শিশুদের শিক্ষাদানে উদ্যোগ নিয়েছি। সিদ্ধান্তটি মোটেও আমার জন্য সহজ ছিলনা। প্রতিকূল পরিবেশে সাইফুর’স ছেড়ে আসা এবং গ্রামে ছোট্ট শিশুদের সাথে নিজের ফিউচার শুরু করার সিদ্ধান্তটি আমাকে দোটানায় ফেলে দিয়েছিল। দেশ-বিদেশে আমার শতশত শিক্ষার্থী। যাদের আমি ইংরেজি বলতে-লিখতে শিখিয়েছি এবং গত ৬ বছর যাবত আমি এই পেশায় কাজ করছি। শিখিয়েছি ইংরেজির বিভিন্ন ‘টিপস এন্ড ট্রিকস’। আমার শিক্ষার্থীদের মধ্যে অনেকেই এখন দেশ-বিদেশে নিজেদের শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন।

শেখানো বিষয়টা সবসময়ই আনন্দের। যখন দেখি আমার শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ রাষ্ট্রের উচ্চ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করছেন, তখন আনন্দে মনটা ভরে যায়। আবার কেউ কেউ আইএলটিএস শিখে বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিচ্ছেন।

এই দীর্ঘ পথচলায় আমি পেয়েছি সাইফুর’স এর মতো একটি পরিবার। যেখানে আমার অনেক স্মৃতি-ভালোবাসা জড়িয়ে আছে। প্রতিনিয়ত শেখানোর পাশাপাশি নিজেও শিখেছি। যাদের ভালোবাসায় নিজেকে পরিপূর্ণ করেছি, তৈরি করেছি নিজের শক্ত একটি ভিত। যাদের কাছে আমি চির ঋনী হয়ে থাকবো। এতোকিছুর পর আপনাদের হয়তো জানার কৌতুহল হচ্ছে তাহলে কেন আমি এমন একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত রেখে ‘ড্রিম স্কুল’ শুরু করেছি?

আসলে আমার আনন্দটা শেখানোর মধ্যে। সেটা শহর হোক কিংবা গ্রাম। বড়দের হোক কিংবা শিশুদের। সবকিছুর আগে আমি আমার মা-মাটিকে ভালোবাসি, আমার গ্রামকে ভালোবাসি, গ্রামের মানুষকে ভালোবাসি। এই পরিবেশ, এই আলো বাতাসেই আমার বেড়ে উঠা। আমি যতদূরই যাইনা কেন, আমার শেকড় এখানেই, এই গ্রামেই। আমার আপন বলতে আমার গ্রাম, গ্রামের মানুষই। দিনশেষে আমি এই মাটিরই সন্তান।

আমার যা কিছু অর্জন তার শুরু এখান থেকেই। শিখতে শুরু করেছি যেই বিদ্যালয় থেকে, যেই শিক্ষকদের হাত ধরে আমার প্রথম শব্দ শেখা শুরু তারাই আমার অনুপ্রেরণা। আমি তাদের কাছে ঋনী। আমার কাছে তাদের প্রত্যাশা রয়েছে বলে আমি বিশ্বাস করি। আমার বাবা-মা, শিক্ষক, প্রতিবেশী, আত্মীয়-স্বজন আমাকে শিখিয়েছেন, মানুষ করেছেন। আজ এতোদূর আসার পেছনে তাদের শ্রম-ঘাম, শিক্ষা, সহযোগিতা ও অনুপ্রেরণা ছিল বলে আমি এখানে আসতে পেরেছি।

সুতরাং, আমি মনে করি আমার নিজের গ্রামকে, গ্রামের মানুষকে এখন কিছু দেবার সময় হয়েছে। এই চিন্তা থেকেই আমি শুরু করেছি ‘ড্রিম স্কুল’। আপনারা আমার পাশে থাকলে, আপনাদের সহযোগিতা থাকলে এই পথচলা খুব বেশি কঠিন হবেনা বলে মনে করি।

আমি আমার শিখন-শেখানোর দীর্ঘ অভিজ্ঞতা এখানে কাজে লাগাতে চাই। এই পথচলায় আমার সাথে আরও যুক্ত থাকবেন সাইফুর’স ও আইইএলটিস-এর একজন অভিজ্ঞ শিক্ষক এবং ‘মাল্টি টেলেন্ট’ আমার বন্ধু সায়মন রাফি ও একটি অভিজ্ঞ শিক্ষক প্যানেল। আমরা গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে আধুনিক ও ইসলামি শিক্ষার সমন্বয়ে একটি ব্যতিক্রম ধর্মী স্কুল গঠতে কাজ শুরু করেছি।

এরই মধ্যে অনেকেই আমার সাথে শেয়ার করেছেন তাদের শিশুরা পড়তে চায় না এবং পড়া মনে রাখতে পারেনা। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে দেখা যায় তারা স্কুলেও আসতে চায় না। আমাদের দেশে এটি একটি বড় সমস্যা। আসলে আমরা শিশুদের কাছে অনেক বেশি প্রত্যাশা করি এবং সে অনুযায়ী ‘প্রেসার ক্রিয়েট’ করি আর সেখানেই সমস্যাটা হয়। এছাড়া স্কুল এনভায়রনমেন্ট-এর একটা বিষয়ও থাকে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা কাজ শুরু করেছি। খুব শীঘ্রই অভিভাবকদের আশানুরুপ একটি প্রতিষ্ঠান আমরা শুরু করতে যাচ্ছি, ইনশাআল্লাহ।

আমাদের এই যাত্রায় ইউনিয়নের সকল শ্রেণি-পেশা, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, কৃষক, শ্রমিকসহ ছোট-বড় সবাইকে আমাদের পাশে পাবো বলে আশা করি। সবার জন্য ভালোবাসা ও দোয়া ‘ড্রিম স্কুল’-এর অফিস কক্ষে সবার দাওয়াত রইল।