• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

টেন্ডারের জন্য খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগ

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

টেন্ডার নিয়ে বিরোধের জেরে খুলনার জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দফতরের কর্মকর্তাকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদার নিয়োগের টেন্ডার জটিলতায় নিজ কার্যালয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন উপ-নিয়ন্ত্রক সেখ আনোয়ারুল করিম। সোমবারের (২৬ সেপ্টেম্বর) এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) খাদ্য কর্মকর্তারা অনশন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। খুলনার খাদ্য কর্মকর্তা সমিতি ও খাদ্য পরিদর্শক সমিতি যৌথভাবে এ কর্মসূচি পালিত হয়। 

খুলনা চলাচল ও নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (খাদ্য) উপ-নিয়ন্ত্রক শেখ আনোয়ারুল করিম বলেন, খাদ্য ঠিকাদার সমিতির ১৫-১৭ জন সোমবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে আমার দফতরে আসেন। তারা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। এক পর্যায়ে জেলা কার্যালয়ের টেন্ডার বিষয়ে আলোচনা করেন তারা। তাদেরকে এ বিষয়ে থামিয়ে দিয়ে বলা হয়ে, জেলা অফিসের আলোচনা এখানে করা ঠিক না। তখন তারা চলে যান। পাঁচ মিনিট পর তারা ফিরে এসে গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে আমার শার্ট টেনে ছিঁড়ে ফেলে এবং রক্তাক্ত জখম করে। এরপর সহকর্মীরা আমাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। 

পরে হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে খালিশপুর থানায় মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলায় ঠিকাদার সমিতির সেক্রেটারিসহ পাঁচ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

খুলনা খাদ্য ঠিকাদার সমিতির সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম রেজা বলেন, ওই কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করতে না পারায় ঠিকাদাররা তার কাছে যেয়ে কারণ জানতে চান। তখন সন্তোষজনক জবাব না দিয়ে তিনি ঠিকাদারদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডায় জড়ান। তবে তাকে কোনও আঘাত করা হয়নি। 

খালিশপুর থানার ওসি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, খাদ্য উপ-নিয়ন্ত্রক শেখ আনোয়ারুল করিমকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ২৭ সেপ্টেম্বর মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় পাঁচ জনের নাম উল্লেখ ও ১০-১২ জন অজ্ঞাত আসামি রয়েছে। মামলাটির তদন্ত চলছে। পাশাপাশি আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে।

এদিকে খাদ্য উপ-নিয়ন্ত্রককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ২৭ সেপ্টেম্বর সকাল থেকে অনশন ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন কর্মকর্তারা।  পরে কর্মকর্তারা কার্যালয়ের সামনে খুলনা যশোর মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন।

এদিকে ঠিকাদাররা খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক বরাবর টেন্ডারে অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগে জানান, জেলায় আটটি এলএসডি ও দু’টি সিএসডি খাদ্য গুদাম রয়েছে। খাদ্য বিভাগ থেকে গত ২৫ জুলাই ঠিকাদার নিয়োগের লক্ষ্যে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। দরপত্র জমাদানের শেষদিন ছিল গত ২২ আগস্ট। ওইদিন দরপত্র খোলা হয়। দরপত্র জমা পড়ে দুইশ’র বেশি। এই প্রক্রিয়া পাবলিক প্রক্রিউরমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৬ ও পিপিআর ২০০৮ অনুযায়ী আহবান করা হলেও বাস্তবে সেই নীতি অনুসরণ করা হয়নি।  

খুলনা জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ বাবুল হোসেন বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত বিজ্ঞাপন এবং পিপিআর’র শর্ত মেনে ছয় সদস্য বিশিষ্ট কমিটি দরপত্র যাচাই-বাছাই করেছে। মূল্যায়ন কমিটি বাছাই সাপেক্ষে যারা যোগ্য হয়েছে তাদের নির্বাচন করেছে। একইসঙ্গে সেটি পাস করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়। অনেকেই বিষয়টি জানতে চেয়েছেন। তবে পিপিআর বিধান অনুযায়ী কেউ যদি অযোগ্য হয় সেই কারণ জানাতে কমিটি বাধ্য নয়। এরপরও কারও আপত্তি থাকলে সেটা আরসি ফুডের কাছে তারা আবেদন করতে পারেন।