• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

বিদ্যুৎ স্যার আলোকিত পিকনিকে কিছু কথা

খন্দকার মোঃ তারেক

স্বর্গের সুখ পৃথিবীতে, আলোকিত ১১ নং এর দিকে, পৃথিবীর মানুষ শান্তি চায়, শক্তি চায়, ভাল মানুষ হতে চায়, ভালো কিছুর অনুকরণ করতে চায়। কিন্তু কে দিবে শান্তি, কে দিবে শক্তি, কে দিবে অনুপ্রেরণা? আমরা যদি সৃষ্টিকর্তার কথা চিন্তা করি তাহলে আমাদের জন্য সৃষ্টিকর্তার একটা নির্দিষ্ট পরিকল্পনা আছে। সৃষ্টিকর্তা দয়াময়, অসীম, শক্তিশালী। তার পরিকল্পনা আমরা জানতে পারি না। তবে অনুমান করতে পারি। আমাদের অনেকগুলো আত্মা যখন একরুপ ধারন করে তখন আমরা সরাসরি সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য লাভ করি। সৃষ্টিকর্তার সান্নিধ্য পেলে আমরা পাই প্রেম, ভালবাসা, আনন্দ। আলোকিত ১১ নং ইউনিয়ন, ফরিদগঞ্জ, চাঁদপুরের মানুষদের মধ্যে রয়েছে প্রেম, ভালোবাসা, মমত্ববোধ। এর বহিঃপ্রকাশ দেখা গিয়েছিল চাঁদপুর জেলার হাইমচর উপজেলার মাঝের চর এ পিকনিকে গিয়ে।

গত শনিবার ছিল পিকনিক। আসলে সেটাকে পিকনিক বললে ভুল হবে, সেটা ছিল মুলত কে কাকে কত বেশি শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, স্নেহ প্রদর্শন করতে পারে তার একটি মহড়া। আমি ছিলাম একজন আগুন্তক। আমি ভিডিও করতেছিলাম। ভিডিওতে সবাই সবার অনুভূতি প্রকাশ করতেছিল। সবাই একত্রে থাকতে চায়, ভালোবাসার মাধ্যমে এক অপরের সাথে থাকতে চায়, কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করতে চায়। সে এক অসাধারণ অনুভূতি। সেটাকে পিকনিক বলা ভুল হবে সেটা ছিল এক স্বর্গ। সবাই একত্রে চরের মধ্যে খেলেছে, সাতার কেটেছে, ঘুরেছে, খাওয়া দাওয়া করেছে। প্রায় ৫০০ জনের এই পিকনিকে একটি কম্পলিন ছিল না। প্রত্যেকটি খাবার ছিল সুস্বাধু। একজন মানুষও খাবার নস্ট করে নাই। চরে কিছু মানুষ বাস করত আমাদের খাবারের পরে তাদের ডেকে এনে চেয়ারে বসিয়ে যত্ন করিয়ে খাবার খাওয়ানো হয়েছে। খাবারের পর তাদের যে হাসি ছিল তাতে মনে হয়েছে স্বর্গের হাসি পৃথিবীতে নেমে এসেছে।

একটি পিকনিক যে মানুষের মধ্যে ভালবাসা সৃষ্টিকরতে পারে, একটি পিকনিক যে দেশপ্রেম সৃষ্টি করতে পারে, একটা পিকনিক যে মমত্ত্ববোধ সৃষ্টিকরতে পারে, একটি পিকনিক যে স্যাক্রিফাইস সৃষ্টিকরতে পারে তা আলোকিত ১১ নং ইউনিয়নের এই পিকনিক না দেখলে আপনি বুঝবেন না। কিছু ঘটনা বলি। শরফুদ্দিন ইউসুফ শান্ত আমাদের ২৮ তম বিসিএস ক্যাডার এর একজন কর্মকর্তা। আমাদের বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডার এর নির্বাচন হয়েছিল। শান্ত স্যারকে আমি সমাজ কল্যাণ পদে দাড়ানোর জন্য অনুরোধ করেছিলাম। শান্ত স্যার বললেন স্যার কত মানুষ গ্রাম থেকে ঢাকায় চলে এসে গ্রামের কথা ভুলে যায়। আমি ভোটে দাড়ালে বা ভোটের পরে আমার যে কস্ট করতে হবে সেই সময়টি আমি যদি আমার গ্রামের আমার প্রিয় মানুষদের জন্য দেই তাহলে আমাদের গ্রামের মডেল সারা পৃথিবী একদিন অনুকরণ করতে পারবে। শান্ত স্যার পিকনিকে যেয়ে কিন্তু সেই মনের ইচ্ছাটা স্বচক্ষে দেখে এসেছেন।

শাহিন ভাই খুব মিস্টি স্বভাবের মানুষ, মানুষকে আনন্দ দেওয়াই কাজ, চমৎকার ইংরেজিতে কথা বলতে পারেন।যে জায়গায় যান সেখানেই নতুন কিছু সৃষ্টি করে আছেন। পিকনিকে যেয়ে চমৎকার গান,নদীর তীরে সারা শরীরে বালু মাখার দৃশ্য ছিল আকর্ষণীয়। শাহিন ভাইকে বলা হয় স্যাক্রিফাইস দা গ্রেট। ঢাকায় নিয়মিত মিটিং করা, গ্রামকে কিভাবে উপরে নিয়ে যাওয়া যায় তার কিংবদন্তি বলা যায়। তারেক ভাইয়ের গলা বসে গিয়েছিল কয়েকদিন ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম করে। তারপরেও তারেকভাই সেটা চিন্তা করে নাই। তারেক ভাইয়ের কাছে ছোট ভাইরা শিখেছে প্ভালোবাসা মমত্ত্ববোধ, বড়দের সম্মান। এগুলো ছিল একটি লার্নিং কনটেন্ট।

একটু পিছনে ফিরে যাই। আসলে এই পিকনিকে যেয়ে আমি আসলে বুঝতে পারি নাই কে রাজা কে প্রজা। আমার কাছে মনে হয়েছে সবাই রাজা, সবাই প্রজা। পিকনিকের আগের দিন রাতে গিয়েছিলাম শাহাদাত স্যারের বাসায়। স্যার যুগ্মসচিব হিসেবে অবসরে যাওয়ার পর এখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কনসালটেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পিকনিকের আগের দিন আলোচনা হচ্ছিল যে পিকনিকে কে কি করবে। এই আলোচনার মুল অংশ ছিল যে পিকনিক থেকে যেন মানুষ কিছু শিখতে পারে। পিকনিক থেকে যেন মানুষ স্যাক্রিফাইস শিখতে পারে, ভালোবাসা শিখতে পারে, প্রাণখুলে হাসতে শিখতে পারে। পিকনিকে যেয়ে শাহাদাত স্যার নিজ হাতে পরম মমত্ত্বে সবাইকে খাওয়াইয়াছিলেন। মনে হলো স্বর্গের সুখ পৃথিবীতে নেমে এসেছে। আমার দীর্ঘ অনুভুতি আছে। সামান্য প্রকাশ করলাম। পরের পর্বে সেই অনুভুতিগুলো প্রকাশ করব। আমি আমার সম্পুর্ন পরিচয় দিলাম। যাতে কেউ মনে করলে যে কোন কাজে যেমন পড়ালেখার জন্য যোগাযোগ করতে পারেন।

বিদ্যুৎ কুমার রায়

সহযোগী অধ্যাপক, রসায়ন

২২তম বিসিএস সাধারণ শিক্ষা।