• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ৮ মার্চ, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

সুবর্ণচরের ‘স্বর্ণ-কৃষাণী’ শিরিণ

সালাহ উদ্দিন সুমন,নোয়াখালী:

আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নোয়াখালীতে ‘খাদ্য লড়াইয়ে নারী’ শীর্ষক উন্মুক্ত সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সংলাপে জৈব নিবিড় কৃষি চর্চা এবং খাদ্য নিরাপত্তায় অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে সুবর্ণচরে নারী কৃষক শিরিণ আক্তারকে ‘স্বর্ণ-কৃষাণী’ সম্মাননা দেওয়া হয়।

রবিবার দুপুরে নোয়াখালী প্রেসক্লাব চত্ত্বরে পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যাকশান নেটওয়ার্ক- প্রান, খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক- খানি ও বন্ধন এ সংলাপের আয়োজন করেন।
খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি) সম্পাদক নুরুল আলম মাসুদের সঞ্চালনায় উন্মুক্ত  সংলাপে প্রধান অতিথি ছিলেন নোয়াখালী সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম সামছুদ্দিন জেহান । এতে নারী কৃষক, উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংগঠক, সাংবাদিক, নারীঅধিকার কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী- পেশার শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
 
বাংলাদেশে কৃষিকাজের সাথে যুক্ত আছেন ৬৮.১ শতাংশ নারী। গৃহস্থালীর সকল কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে নিয়োজিত নারী কৃষকদের ৭৪ শতাংশ গবাদিপশু পালন, ৬৩ শতাংশ স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষণ, ৪০ শতাংশ শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন, শস্য মাড়াই ও মাড়াই পরবর্তী কার্যক্রম, খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন করলেও নারীকৃষক হিসেবে এদের নেই কোন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি। তাই দেশের কৃষি, অর্থনীতি এবং খাদ্য নিরাপত্তার ধারা চলমান রাখতে নারী কৃষকদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো এবং স্বীকৃতি দেওয়া প্রয়োজন বলে ‘খাদ্য লড়াইয়ে নারী’ শীর্ষক উন্মুক্ত সংলাপে আলোচকরা এই দাবি তোলেন।
 
সংলাপে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের কৃষিতে নারীদের শুধুমাত্র সাহায্যকারী হিসেবে বিবেচিত হয়। সরকারি কৃষি উপকরণ প্রাপ্তি, উৎপাদিত কৃষিপণ্য সরবরাহ ও বিপণন, প্রযুক্তি সুবিধা, ভূমিতে প্রবেশাধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা বৈষম্য ও অবহেলার শিকার হচ্ছেন। গত সাত বছরে বাংলাদেশে কৃষিখাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও ভূমিতে গ্রামীণ নারীর মালিকানা মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশ এবং বাকি ৯৬ শতাংশ জমির ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে পুরুষের নামে, যা নারীর পূর্ণ অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে এবং সামগ্রিকভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।

কৃষিজ কর্মকান্ডে প্রধান কুশীলব হয়েও নারীরা ‘কৃষক’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি না পাওয়া, জমিতে সমভাবে প্রবেশাধিকার না থাকা, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য না পাওয়া, সমভাবে সরকারি পরিসেবা না পাওয়া ইত্যাদি কার্যত: নারী প্রতি সহিংসতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই নারী প্রতি সকল ধরণের সহিংসতা বন্ধে কৃষক, শ্রমিক, জেলে, গৃহকর্মীসহ অসংখ্য বৈচিত্র্যময় পেশায় নিয়োজিত নারীদের খাদ্যের লড়াইয়ে পুঁজিবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্রমাগত শোষণ এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে সকলের সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশের আহ্বান জানানো হয়।

সংলাপে বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কৃষক মৈত্রীর সভাপতি মনির আহম্মদ, পারিবারিক জোটের সভাপতি নুর নাহার রিনি, নাছিমা আক্তার, নোয়াখালী নারী অধিকার জোটের সভাপতি লায়লা পারভীন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার ফজলুল হক বাদল, এনআরডিএসের নির্বাহী পরিচালক আউয়াল আউয়াল প্রমুখ।