• ❐ www.crimeprotidin.com ❐ ৮ম বর্ষ ❐ ঢাকা ❐ ২০ মার্চ, ২০২০ ❐ dailycrimeprotidin@gmail.com ❐

জনসমাগমে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইসির প্রশিক্ষণেই ‘গণজমায়েত’!

ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক

চসিকের নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রিজাইডং-সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। পৃথক কেন্দ্রে এসব প্রশিক্ষণে ৩ শতাধিকের উপরে প্রশিক্ষণার্থী অংশগ্রহণ করেছেন। এখানে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ইভিএম ভোটিং এর জন্য প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। 

শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া এসব প্রশিক্ষণেও চলছে একাধিক গণজমায়েত! প্রতিটি কেন্দ্রে শত শত শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেছে। এসব প্রশিক্ষণ ২৫ মার্চ পর্যন্ত চলবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে করোনা ভাইরাসকে কেন্দ্র করে চসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের ‘গণজমায়েত’ বন্ধ করা, চট্টগ্রামের নির্বাচন কমিশনের সাথে প্রার্থীদের বৈঠক স্থগিত করা, নির্বাচন কমিশনসহ নানাভাবে প্রচার-প্রচারণায় গণজমায়েত বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে। 

কিন্তু নির্বাচন কমিশন গণজমায়েত বন্ধের নির্দেশ দিয়েও নির্বাচনী কাজের প্রশিক্ষণে শত শত উপস্থিতি বন্ধ করেনি। এসব বিষয়ে প্রশিক্ষার্থীদের মাঝে নানা উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার পাশাপাশি আতংকের মধ্যেও করছেন প্রশিক্ষণ। এতে এই প্রশিক্ষণ সেন্টার কতটুকু নিরাপদ সেই বিষয়েও প্রশ্ন সকলের মাঝে। তবে করোনা নিয়ে নানাভাবে সচেতনতামূলক সারাদেশে সরকার ও বেসরকারীভাবে সর্তক অবস্থানে রয়েছে। নির্দেশনা দেওয়া রেয়ছে বিভিন্নস্থানেও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রশিক্ষণার্থী বলেন, করোনা আতঙ্কে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় রয়েছি। কি হচ্ছে, কি হবে! এরই মধ্যে শুরু হচ্ছে প্রশিক্ষণও। তারপর এই ভাইরাসটি হচ্ছে ছোঁয়াছে। এতো লোকজন এক সাথে প্রশিক্ষণ নিতে গিয়েও সমস্যায় পড়ে যাবো। আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসও নিতে হবে। কার ভিতর কি আছে, সেটা আল্লাহই জানেন। যেখানে নির্বাচন কমিশন বলছেন, সবকিছু সিমিত করতে, সেখানে এতো বড় প্রশিক্ষণের আয়োজন।

সিডিএ পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ ও খাজা আজমেরি স্কৃলে প্রশিক্ষণ নেয়া বেশকজন শিক্ষার্থী বলেন, এখানে যেভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, সেখানেও তো ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাছাড়া নির্বাচন কমিশন গণজমায়েত বন্ধ করতে বলা হলেও এখানে কেন এতো উপস্থিতি।

ইসলামী আন্দোলনের মেয়র প্রার্থী জান্নাতুল ইসলাম বলেন, দেশের তথা সারাবিশ্বের এতো বড় ঘটনা বা আতংক চলছে, সরকার ছোট একটা নিার্বচন নিয়ে তামাশা শুরু করেছে। জনগণের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করে নির্বাচনী প্রশিক্ষণ দেয়ার নামে সময় ক্ষেপণ করছে। দ্রুত নির্বাচন স্থগিত করে জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা জোরদার করতে অনুরোধ করছি।  একই কথা বললেন অন্য মেয়র প্রার্থীসহ একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীও।

চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা এবং চসিক নির্বাচনের রির্টানিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বলেন, যে সব অফিসার নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রশিক্ষণ ২০ মার্চ শুরু হয়ে চলবে ২৫ মার্চ পর্যন্ত। এরই মধ্যে অফিসারদের তালিকা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা যে নির্দেশনা নিবেন, সেভাবেই কাজ করা হবে বলে জানান তিনি।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, করোনা ভাইরাসের কারণে সতর্কতার প্রচার-প্রচারণা, সভা-সমাবেশ এবং গণ জমায়েতের নামে মেয়র-কাউন্সিলর প্রার্থীদের মতবিনিময় ছোট পরিসরে এবং স্থগিত করেছে। কিন্তু শুক্রবার থেকেই চসিকের নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার এবং পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ শুরু করে। প্রশিক্ষণের জন্য ৯টি ভেন্যুও ঠিক করা হয়েছে। সেগুলো হচ্ছে কুলগাঁও স্কুল অ্যান্ড কলেজ, রহমানিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, সিডিএ পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাহাড়তলী বালিকা বিদ্যালয়, ডা. খাস্তগীর স্কুল অ্যান্ড কলেজ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ স্কুল, কাজেম আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খাজা আজমেরী উচ্চ বিদ্যালয়, আগ্রাবাদ সরকারি কলোনি স্কুল (বালিকা শাখা)। এখানেই উপস্থিত প্রতিদিন ২’শ থেকে ৪’শ জনের উপরে। একইভাবে ২১ মার্চ থেকে প্রিজাইডিং অফিসার ও সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারসহ শুরু হচ্ছে পোলিং অফিসারদের প্রশিক্ষণ। তবে করোনা আতংকের মধ্যে রীতিমতো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণার্থীরা। গণজমায়েত বন্ধ করলেও প্রশিক্ষণেও তো অনেক লোকের সমাগম হবে। এখান থেকেও তো করোনা ভাইরাস থাকলে তা ছড়াতে পারে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, এবারের চসিক নির্বাচনে ৭৩৫ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন। এবার নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থী এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৬১ প্রার্থী এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৫৬ প্রার্থী রয়েছেন।