সশস্ত্র বাহিনীর বর্তমান-সাবেক সদস্য, তাদের বাবা-মা ও সন্তানসহ ৪ হাজার ১৫৭ জন এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। সংক্রমিতদের অধিকাংশ সশস্ত্র বাহিনীর সাবেক সদস্য। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত সশস্ত্র বাহিনীর ২৬ জন সদস্য মারা গেছেন। তাদের মধ্যে তিনজনকে চাকরিরত ছিলেন। এই তিনজনের মধ্যে দু’জন সৈনিক ও একজন মেসওয়েটার। মারা যাওয়া দুই সৈনিক সড়ক দুর্ঘনায় আহত হয়ে আগে থেকে সংকটপূর্ণ অবস্থায় ছিলেন।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারির মিলিটারি প্যারেড গ্রাউন্ডে ৭৮তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্স এবং ৫৩তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের অফিসার ক্যাডেটদের কমিশন প্রাপ্তি উপলক্ষে আয়োজিত রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একথা জানান সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ।
সেনা প্রধান বলেন, সেনাবাহিনীতে আক্রান্তের সংখ্যার দিক থেকে ঢাকা, নবম পদাতিক ডিভিশনের আওতাধীন জাজিরা ক্যান্টমেন্ট ও চট্টগ্রাম সেনানিবাসে দায়িত্বরত সৈনিকরা বেশি। অন্যান্য জায়গায় আক্রান্তের সংখ্যা কম। তিনি বলেন, করোনা মেকাবেলায় আমরা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। এখন পর্যন্ত চাকরিরত যে তিন সদস্য মারা গেছেন তাদের মধ্যে দুই সৈনিক সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হয়ে মুমূর্ষু অবস্থায় ছিলেন। হয়ত শেষ স্টেজে গিয়ে তারা করোনায় আক্রান্ত হন। এমনিতেই তাদের দু’জনের ফিরে আসা দূরহ ছিল।
সেনা প্রধান বলেন, করোনা মোকাবিলায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের জন্য প্রত্যেকটি সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। রিয়েল টাইম পিসিআর মেশিন বসানো হয়। আমাদের পর্যাপ্ত টেস্টিং কিট রয়েছে। আমাদের টেস্ট করানোর জন্য অন্য কোথাও যেতে হয় না। কর্মরত, সাবেক সেনা সদস্য ও তাদের পরিবারের কোনো সদস্য যখনই আসে তখনই আমরা করোনার টেষ্ট করাচ্ছি। এই সুযোগ আমরা নিশ্চিত করেছি। পর্যাপ্ত মেশিন কেনা হয়েছে। নিজস্ব অর্থায়নের মেশিন ক্রয় করা হয়েছে। প্রতিনিয়ত টেস্টিং কিট বিদেশ থেকে আমরা আনছি। ১৫-২০ দিন পরপরই কিট আনা হচ্ছে। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত কিট রয়েছে।
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় যা যা মেশিন প্রয়োজন সেগুলো বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। শুরুতে আইসিইউতে ভেন্টিলেশন ও অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়ার জন্য যতটুকু সুযোগ-সুবিধা ছিল তা অনেকাংশে বৃদ্ধি করা হয়েছে। মাস্ক, হ্যান্ডগ্লোভস ও স্যানিটাইজার আমরা অনেক কিনেছি। বিভিন্ন সংস্থা থেকে আমরা সহযোগিতা পেয়েছি, এখনও পাচ্ছি।
সেনা প্রধান বলেন, প্রত্যেক সেনানিবাসে প্রত্যেক সৈনিকের জন্য প্রটেকটিভ ম্যাজারস আমরা নিয়েছি। তারপরও আক্রান্ত হচ্ছে। এটা অস্বাভাবিক নয়। এরপরও আমরা চেষ্টা করছি যাতে চাকরিরত সেনা সদস্যদের মধ্যে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকে।
জেনারেল আজিজ আহমেদ বলেন, করোনা মোকাবেলায় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা করতে সরকার সেনাবাহিনীকে যে দায়িত্ব দিয়েছে সেটা পেশাদারিত্বের মধ্য দিয়ে আমরা পালন করে আসছি। এখনও করছি, ভবিষ্যতেও করব।