ব্যাংক আমানতের এত টাকা গেল কোথায়

  • ক্রাইম প্রতিদিন ডেস্ক
  • ২০২২-০২-২৬ ১৪:০০:০১
popular bangla newspaper, daily news paper, breaking news, current news, online bangla newspaper, online paper, bd news, bangladeshi potrika, bangladeshi news portal, all bangla newspaper, bangla news, bd newspaper, bangla news 24, live, sports, polities, entertainment, lifestyle, country news, Breaking News, Crime protidin. Crime News, Online news portal, Crime News 24, Crime bangla news, National, International, Live news, daily Crime news, Online news portal, bangladeshi newspaper, bangladesh news, bengali news paper, news 24, bangladesh newspaper, latest bangla news, Deshe Bideshe, News portal, Bangla News online, bangladeshi news online, bdnews online, 24 news online, English News online, World news service, daily news bangla, Top bangla news, latest news, Bangla news, online news, bangla news website, bangladeshi online news site, bangla news web site, all bangla newspaper, newspaper, all bangla news, newspaper bd, online newspapers bangladesh, bangla potrika, bangladesh newspaper online, all news paper, news paper, all online bangla newspaper, bangla news paper, all newspaper bangladesh, bangladesh news papers, online bangla newspaper, news paper bangla, all bangla online newspaper, bdnewspapers, bd bangla news paper, bangla newspaper com, bangla newspaper all, all bangla newspaper bd, bangladesh newspapers online, daily news paper in bangladesh, bd all news paper, daily newspaper in bangladesh, Bangladesh pratidin, crime pratidin, অনলাইন, পত্রিকা, বাংলাদেশ, আজকের পত্রিকা, আন্তর্জাতিক, অর্থনীতি, খেলা, বিনোদন, ফিচার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চলচ্চিত্র, ঢালিউড, বলিউড, হলিউড, বাংলা গান, মঞ্চ, টেলিভিশন, নকশা, ছুটির দিনে, আনন্দ, অন্য আলো, সাহিত্য, বন্ধুসভা,কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, অটোমোবাইল, মহাকাশ, গেমস, মাল্টিমিডিয়া, রাজনীতি, সরকার, অপরাধ, আইন ও বিচার, পরিবেশ, দুর্ঘটনা, সংসদ, রাজধানী, শেয়ার বাজার, বাণিজ্য, পোশাক শিল্প, ক্রিকেট, ফুটবল, লাইভ স্কোর, Editor, সম্পাদক, এ জেড এম মাইনুল ইসলাম পলাশ, A Z M Mainul Islam Palash, Brahmanbaria, Brahmanbaria Protidin, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিদিন, Bandarban, Bandarban Protidin, বান্দরবন, বান্দরবন প্রতিদিন, Barguna, Barguna Protidin, বরগুনা, বরগুনা প্রতিদিন, Barisal, Barisal Protidin, বরিশাল, বরিশাল প্রতিদিন, Bagerhat, Bagerhat Protidin, বাগেরহাট, বাগেরহাট প্রতিদিন, Bhola, Bhola Protidin, ভোলা, ভোলা প্রতিদিন, Bogra, Bogra Protidin, বগুড়া, বগুড়া প্রতিদিন, Chandpur, Chandpur Protidin, চাঁদপুর, চাঁদপুর প্রতিদিন, Chittagong, Chittagong Protidin, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম প্রতিদিন, Chuadanga, Chuadanga Protidin, চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা প্রতিদিন, Comilla, Comilla Protidin, কুমিল্লা, কুমিল্লা প্রতিদিন, Cox's Bazar, Cox's Bazar Protidin, কক্সবাজার, কক্সবাজার প্রতিদিন, Dhaka, Dhaka Protidin, ঢাকা, ঢাকা প্রতিদিন, Dinajpur, Dinajpur Protidin, দিনাজপুর, দিনাজপুর প্রতিদিন, Faridpur , Faridpur Protidin, ফরিদপুর, ফরিদপুর প্রতিদিন, Feni, Feni Protidin, ফেনী, ফেনী প্রতিদিন, Gaibandha, Gaibandha Protidin, গাইবান্ধা, গাইবান্ধা প্রতিদিন, Gazipur, Gazipur Protidin, গাজীপুর, গাজীপুর প্রতিদিন, Gopalganj, Gopalganj Protidin, গোপালগঞ্জ, গোপালগঞ্জ প্রতিদিন, Habiganj, Habiganj Protidin, হবিগঞ্জ, হবিগঞ্জ প্রতিদিন, Jaipurhat, Jaipurhat Protidin, জয়পুরহাট, জয়পুরহাট প্রতিদিন, Jamalpur, Jamalpur Protidin, জামালপুর, জামালপুর প্রতিদিন, Jessore, Jessore Protidin, যশোর, যশোর প্রতিদিন, Jhalakathi, Jhalakathi Protidin, ঝালকাঠী, ঝালকাঠী প্রতিদিন, Jhinaidah, Jhinaidah Protidin, ঝিনাইদাহ, ঝিনাইদাহ প্রতিদিন, Khagrachari, Khagrachari Protidin, খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি প্রতিদিন, Khulna, Khulna Protidin, খুলনা, খুলনা প্রতিদিন, Kishoreganj, Kishoreganj Protidin, কিশোরগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ প্রতিদিন, Kurigram, Kurigram Protidin, কুড়িগ্রাম, কুড়িগ্রাম প্রতিদিন, Kushtia, Kushtia Protidin, কুষ্টিয়া, কুষ্টিয়া প্রতিদিন, Lakshmipur, Lakshmipur Protidin, লক্ষ্মীপুর, লক্ষ্মীপুর প্রতিদিন, Lalmonirhat, Lalmonirhat Protidin, লালমনিরহাট, লালমনিরহাট প্রতিদিন, Madaripur, Madaripur Protidin, মাদারীপুর, মাদারীপুর প্রতিদিন, Magura, Magura Protidin, মাগুরা, মাগুরা প্রতিদিন, Manikganj, Manikganj Protidin, মানিকগঞ্জ, মানিকগঞ্জ প্রতিদিন, Meherpur, Meherpur Protidin, মেহেরপুর, মেহেরপুর প্রতিদিন, Moulvibazar, Moulvibazar Protidin, মৌলভীবাজার, মৌলভীবাজার প্রতিদিন, Munshiganj, Munshiganj Protidin, মুন্সীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ প্রতিদিন, Mymensingh, Mymensingh Protidin, ময়মনসিংহ, ময়মনসিংহ প্রতিদিন, Naogaon, Naogaon Protidin, নওগাঁ, নওগাঁ প্রতিদিন, Narayanganj, Narayanganj Protidin, নারায়ণগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ প্রতিদিন, Narsingdi, Narsingdi Protidin, নরসিংদী, নরসিংদী প্রতিদিন, Natore , Natore Protidin, নাটোর, নাটোর প্রতিদিন, Nawabgonj, Nawabgonj Protidin, নওয়াবগঞ্জ, নওয়াবগঞ্জ প্রতিদিন, Netrokona, Netrokona Protidin, নেত্রকোনা, নেত্রকোনা প্রতিদিন, Nilphamari, Nilphamari Protidin, নীলফামারী, নীলফামারী প্রতিদিন, Noakhali, Noakhali Protidin, নোয়াখালী, নোয়াখালী প্রতিদিন, Norai, Norai Protidin, নড়াইল, নড়াইল প্রতিদিন, Pabna, Pabna Protidin, পাবনা, পাবনা প্রতিদিন, Panchagarh, Panchagarh Protidin, পঞ্চগড়, পঞ্চগড় প্রতিদিন, Patuakhali, Patuakhali Protidin, পটুয়াখালী, পটুয়াখালী প্রতিদিন, Pirojpur, Pirojpur Protidin, পিরোজপুর, পিরোজপুর প্রতিদিন, Rajbari, Rajbari Protidin, রাজবাড়ী, রাজবাড়ী প্রতিদিন, Rajshahi , Rajshahi Protidin, রাজশাহী, রাজশাহী প্রতিদিন, Rangamati, Rangamati Protidin, রাঙ্গামাটি, রাঙ্গামাটি প্রতিদিন, Rangpur, Rangpur Protidin, রংপুর, রংপুর প্রতিদিন, Satkhira, Satkhira Protidin, সাতক্ষীরা, সাতক্ষীরা প্রতিদিন, Shariyatpur, Shariyatpur Protidin, শরীয়তপুর, শরীয়তপুর প্রতিদিন, Sherpur, Sherpur Protidin, শেরপুর, শেরপুর প্রতিদিন, Sirajgonj, Sirajgonj Protidin, সিরাজগঞ্জ, সিরাজগঞ্জ প্রতিদিন, Sunamganj, Sunamganj Protidin, সুনামগঞ্জ, সুনামগঞ্জ প্রতিদিন, Sylhet, Sylhet Protidin, সিলেট, সিলেট প্রতিদিন, Tangail, Tangail Protidin, টাঙ্গাইল, টাঙ্গাইল প্রতিদিন, Thakurgaon, Thakurgaon Protidin, ঠাকুরগাঁও, ঠাকুরগাঁও প্রতিদিন, ক্রাইম প্রতিদিন, ক্রাইম, প্রতিদিন, Crime, Protidin, অপরাধ মুক্ত বাংলাদেশ চাই, অমুবাচা, crimeprotidin

করোনার সময়ে দেশ-বিদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড যখন স্থবির ছিল তখন ব্যাংকে আমানত প্রবাহ বেড়েছিল অস্বাভাবিক গতিতে। করোনার প্রকোপ কমায় দেশ-বিদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে।

এই অবস্থায় ব্যাংকে আমানত প্রবৃদ্ধি আগের চেয়ে বাড়ার কথা। কিন্তু ব্যাংকে প্রবৃদ্ধি না বেড়ে অস্বাভাবিক গতিতে কমতে শুরু করেছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ বা ৫১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে আমানত প্রবাহ বেড়েছিল ৫১ শতাংশের বেশি।

আমানতের প্রবৃদ্ধির হার বাড়া বা কমার এ গতিকে দেশের শীর্ষস্থানীয় অর্থনীতিবিদ ও গবেষকরা অস্বাভাবিক বলে মন্তব্য করেছেন। তাদের মতে, ব্যবসা-বাণিজ্যের গতি বাড়লে মানুষের আয় বাড়ে। আয়ের একটি অংশ সঞ্চয় করে। ফলে ব্যাংকে আমানত প্রবাহও বাড়ে। কিন্তু এখন ঘটছে উলটো ঘটনা। আমানত প্রবাহ না বেড়ে বরং কমছে। এটি অস্বাভাবিক। যে সময়ে আমানত কমার কথা তখন কেন বেড়েছে, এখন বাড়ার কথা, কেন কমছে?

গ্রাহকদের এসব টাকা কোথায় যাচ্ছে? প্রতিষ্ঠানিক খাতে বিনিয়োগ হলে সেটি ঘুরেফিরে ব্যাংকেই আসত। কিন্তু ব্যাংকে আসছে না। তার মানে এসব অর্থ অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে চলে যাচ্ছে। হুন্ডির মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হচ্ছে কিনা সেটাও দেখার বিষয়? এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা উচিত।

এ প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গবেষকরা বলেছেন, করোনার কারণে ২০২০ সালে মানুষের চলাচল যেমন কম ছিল, তেমনি টাকার চলাচল ছিল স্তিমিত। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ছিল স্থবিরতা। যে কারণে গ্রাহকদের টাকা ছিল ব্যাংকমুখী। করোনার প্রভাব কমার কারণে এখন মানুষের চলাচল বেড়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বিনিয়োগ হচ্ছে। এসব কারণে টাকা এখন ব্যাংক থেকে বের হচ্ছে। এছাড়া মুনাফার হার কম হওয়ায় মানুষ ব্যাংকে টাকা না রেখে বিভিন্ন স্থানে লগ্নি করছে। এসব কারণে আমানত প্রবাহ অস্বাভাবিকভাবে কমেছে। করোনার প্রভাব চলে গেলে এ অস্বাভাবিকতা স্বাভাবিক হতে কমপক্ষে ১ থেকে ২ বছর সময় লাগবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আমানতের প্রবৃদ্ধি কমলেও ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য রয়েছে ২ লাখ ১৭ হাজার কোটি টাকা। গ্রাহকদের আমানতের নিরাপত্তার স্বার্থে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখার কথা ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু রাখা আছে ৪ লাখ ৪৮ হাজার কোটি টাকা।

গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে ব্যাংকিং খাতে আমানত বেড়েছিল ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫১ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৫৮ হাজার ৫৩৪ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের তুলনায় প্রবৃদ্ধি কমেছে ৪৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে আমানত কম বেড়েছে ৫১ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। আগে আমানত বেড়েছে গড়ে ৯ থেকে ১৫ শতাংশ বা তারও বেশি। ৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেলেও আমানত বাড়ত ১ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা। সেখানে বেড়েছে মাত্র সাড়ে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। সর্বনিম্ন প্রত্যাশার চেয়ে সাড়ে ৬৮ হাজার কোটি টাকা কম বেড়েছে। এসব টাকা ব্যাংকেই আসার কথা। কিন্তু ব্যাংকে না এসে কোথায় গেল।

এদিকে ব্যাংকে আমানত কম আসার কারণ হিসাবে রেমিট্যান্সের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কথা বলা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারির তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে প্রায় ২০ শতাংশ। গত অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছিল প্রায় ৩৫ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে রেমিট্যান্স কমেছে ২৯৭ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় ২৫ হাজারর ৫৪২ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই টাকাও আমানত হিসাবে যোগ হতো। কিন্তু রেমিট্যান্স কমায় ওই অর্থ আমানতের হিসাবে আসেনি।

করোনার কারণে ব্যবসায় মন্দা থাকায় উদ্যোক্তারা টাকা খরচ করতে পারেনি। ফলে গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে সাধারণ সঞ্চয়ী হিসাবে চলতি আমানত বেড়েছিল সাড়ে ৩ হাজার শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় বিনিয়োগ কিছুটা বেড়েছে। ফলে ওই হিসাবে আমানত বাড়ার পরিবর্তে কমেছে ৮২ শতাংশ। তবে মোট আমানতের মধ্যে চলতি আমানত মাত্র ২০ শতাংশ। বাকি ৮০ শতাংশই মেয়াদি আমানত। এ কারণে চলতি আমানত বাড়া বা কমা খুব বেশি মোট আমানতকে প্রভাবিত করে না।

মেয়াদি আমানত গত অর্থবছরের আলোচ্য সময়ে বেড়েছিল ৩৪ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে কমেছে ৪২ শতাংশ।

অর্থনীতিবিদরা প্রশ্ন তুলেছেন, করোনার সময়ে মানুষের আয় কম ছিল। ওই সময়ে ব্যাংকের সঞ্চয় ভেঙে খরচ করার কথা। কিন্তু তা না করে সে সময়ে মানুষ আরও বেশি সঞ্চয় করেছেন। এটা কি করে হয়? এখন আয় কিছুটা বেড়েছে। আর সঞ্চয় তুলে নিয়ে খরচ করছেন। এটা কিভাবে সম্ভব?

ব্যাংকে আমানত কমলে সেগুলো যায় শেয়ারবাজার বা সঞ্চয়পত্রে। কিন্তু দুই জায়গায় টাকার প্রবাহ কমেছে। গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল ২০ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বিক্রি হয়েছে ৯ হাজার ৫৯০ কোটি টাকা। এ খাতে বিনিয়োগ কম হয়েছে ১০ হাজার ৮৯৭ কোটি টাকা। শেয়ারবাজারে মন্দা অব্যাহত রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসে তাহলে আমানতের টাকা গেল কোথায়?

গবেষকরা বলেছেন, ব্যাংকিং খাতের ওই তথ্য-উপাত্ত দুই ধরনের বার্তা দিচ্ছে। এক. ব্যাংক খাতের সেবা নিচ্ছে শুধু সচ্ছলরাই, অসচ্ছলরা ব্যাংকে আসতে পারছে না। মানুষ দুঃসময়ে সঞ্চয় করে, সুসময়ে সঞ্চয় ভাঙে। দুই. পরিস্থিতি ক্রমেই উন্নতি হওয়ায় টাকা ব্যাংকের বাইরে চলে যাচ্ছে। টাকা দেশে থাকলে কোনো না কোনো একটি পর্যায়ে ব্যাংকে আসতই। কিন্তু তা আসছে না। ফলে টাকা হুন্ডির মাধ্যমে দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাচ্ছে। করোনায় বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ বন্ধ থাকায় টাকা ব্যাংকে ঢুকেছে। এখন সব খোলায় টাকা ব্যাংক থেকে বেরিয়ে তার গন্তব্যে বা পাচার হয়ে যাচ্ছে।

বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, গবেষক ও পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমানত হচ্ছে ব্যাংকের রক্ত সঞ্চালনের মতো। দীর্ঘ সময় ধরে আমানত কমতে থাকলে ব্যাংকগুলোতে তারল্যে ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে বিষয়ে এখনই সতর্ক হতে হবে। আমানত বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আমানতকারীরা ব্যাংক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে যে কি পরিস্থিতি হয় কয়েক দফায় দেশের ব্যাংক খাত অনুভব করেছে। পরিস্থিতি যাতে সেদিকে না যায় সে বিষয়ে নজর দিতে হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, আমানত কমার পাশাপাশি বৈদেশিক সম্পদও কমছে। করোনার সময়ে গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে নিট বৈদেশিক সম্পদ বেড়েছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। বৃদ্ধির হার ছিল সাড়ে ৩ হাজার শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বৈদেশিক সম্পদ বাড়ার পরিবর্তে কমেছে ১৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ১২২ শতাংশ নেতিবাচক। অথচ এ সম্পদ এখন বাড়ার কথা। রেমিট্যান্স কমা ও আমদানি বাড়ায় এতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ভাবে দেশ থেকে বৈদেশিক মুদ্রা বিদেশে চলে যাচ্ছে।

সূত্র জানায়, করোনার সময়ে খোলা বাজারে ডলারের দাম ছিল তলানিতে। নভেম্বরে তা বেড়ে সর্বোচ্চ ৯৫ টাকায় উঠেছিল। এখন কিছুটা কমেছে। ওই সময়ে ব্যাংকে দাম ছিল ৮৭ থেকে ৯০ টাকা। ব্যাংকের চেয়ে খোলা বাজারে প্রতি ডলারের দাম ৫ থেকে ৮ টাকা বেশি ছিল। যা অতীতে কখনো হয়নি। ব্যাংক থেকে সাধারণত ১-২ টাকা বেশি থাকে খোলা বাজারে। কখনও ব্যাংকের চেয়ে কম থাকে। সাধারণত চাহিদা বেশি থাকলেই খোলা বাজারে ডলারের দাম বাড়ে। করোনার পরে হঠাৎ করে খোলা বাজারে ডলারের দাম কেন এত বাড়ল তা খতিয়ে দেখা দরকার বলে অনেকে মনে করেন। ভ্রমণ, শিক্ষা বা চিকিৎসা খাতেই ডলার যাচ্ছে। নাকি অন্য কাজেও পাচার হচ্ছে।

মহামারি বা দুর্যোগের সময় মানুষ ব্যাংক থেকে টাকা তুলে হাতে রাখে। স্বাভাবিক সময়ে ব্যাংকে রাখে। কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে দেখা যাচ্ছে উলটো চিত্র। অর্থাৎ গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে ব্যাংক থেকে মানুষের হাতে আসা টাকার প্রবাহ কমেছিল ৩০৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে তা বেড়েছে ১২৬ শতাংশ। অর্থাৎ মহামারির সময়ের চেয়ে এখন মানুষের হাতে টাকা বেশি।

আমানত প্রবাহ বাড়ায়, ব্যাংক থেকে মানুষ টাকা কম তোলায়, রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকার জোগান বাড়ানোর কারণে করোনার মন্দায়ও ব্যাংক খাতে টাকার প্রবাহ বেড়েছিল। কিন্তু চাহিদা না থাকায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে উদ্যোগ নিয়েও ঋণ প্রবাহ বাড়ানো সম্ভভ হয়নি। ফলে গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে ব্যাংকে টাকার প্রবাহ বেড়েছিল ৪০ শতাংশের বেশি। কিন্তু ঋণ প্রবাহ কমেছিল সাড়ে ৪১ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের ওই সময়ে টাকার প্রবাহ কমেছে ৪৩ শতাংশ। এদিকে ঋণ প্রবাহ বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। আমানত ও মানুষের হাতে টাকা চলে যাওয়ার হার বাড়ায় ব্যাংকে কমেছে টাকার প্রবাহ। অন্যদিকে করোনার পরে সব খাতে ঋণের চাহিদা বেড়েছে। ফলে বিতরণও বাড়ছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতে ঋণ ও আমানতের মধ্যে সব সময়ই একটি ভারসাম্য রাখতে হয়। ঋণ বৃদ্ধির চেয়ে আমানত বাড়তে হয় বেশি। কেননা ব্যাংক ১০০ টাকা আমানত নিয়ে পুরো টাকাই বিনিয়োগ করতে পারে না। ১৬ টাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। বাকি ৮৪ টাকা বিনিয়োগ করতে পারে। এখন যদি আমানতের চেয়ে ঋণ বেশি বাড়ে এবং এটি দীর্ঘ সময় চলে তাহলে তারল্য সংকট আবার বেড়ে যাবে। এ জন্য আমানত কেন কেমছে, তা যেমন দেখা উচিত। তেমনি ঋণের টাকা কোথায় যাচ্ছে সেদিকেও নজর দেওয়া দরকার।

গত অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারিতে রপ্তানি আয় কমেছিল ১ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেড়েছে ৩০ দশমিক ৩৪ শতাংশ। আলোচ্য সময়ে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৬৮৮ কোটি ডলার। টাকার অঙ্কে ৪৬ হাজার ৭৮৪ কোটি টাকা। এ অর্থ ব্যাংকে তারল্যের জোগান বাড়িয়েছে। কিন্তু রপ্তানির এ অর্থ আমদানিতে ব্যয় হয়ে গেছে। উলটো রেমিট্যান্স থেকে আরও অর্থ নিয়ে আমদানি ব্যয় মেটাতে হয়েছে।

গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে আমদানিতে খরচ হয়েছিল ২ হাজার ৭২৭ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে খরচ হয়েছে ৪ হাজার ২১২ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি খরচ হয়েছে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি ডলার। এ খাতে ব্যয় বেড়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭১০ কোটি টাকা। রপ্তানিতে যে টাকা বেশি এসেছে তার চেয়ে বেশি খরচ বেড়েছে ৮০ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। যা রেমিট্যান্স থেকে জোগান দেওয়া হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

 
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
-->

Shotoborshe Mujib, A Z M Mainul Islam Palash, Crime Protidin Media And Publication