করোনা ঝুঁকির মুখে যে শিল্পগুলো সবচেয়ে বেশি সংকটের মুখে পড়েছে তার প্রথমদিকেই রয়েছে প্রিন্ট মিডিয়া বা সংবাদপত্র শিল্প। করোনা মোকাবেলায় সামাজিক বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করতে গত ২৬ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার পর সংবাদপত্র শিল্পে ধস নেমেছে। ইতিমধ্যে মানবজমিন পত্রিকা তার প্রিন্ট ভার্সন বন্ধ করে দিয়েছে। শুধু অনলাইনে তাদের কার্যক্রম চলছে।
জানা গেছে যে, এই পরিস্থিতিতে আরও অন্তত ৮, ১০টি পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সন খুব শিগগিরই বন্ধ করে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। পত্রিকাগুলোর প্রচার সংখ্যা কমে গেছে অর্ধেকেরও কম। সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিকগুলো এখন সীমিত আকারে পত্রিকা প্রকাশ করছে বলে জানা গেছে। তাদের বিভিন্ন বিষয়ের পাতাগুলো, সেগুলো আপাতত তারা বন্ধ রেখেছে।
সংবাদপত্রগুলোকে এখন বহুমুখী চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে। তার মধ্যে প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো বিজ্ঞাপনের আকাল। এখন সরকারি ছুটির কারণে পত্রিকাগুলো কোনো বিজ্ঞাপন পাচ্ছে না। এই বিজ্ঞাপন না পাওয়ার কারণে পত্রিকাগুলোর আয়-ব্যয়ের সামঞ্জস্য রাখা কঠিন হয়ে পড়ছে।
এরপর দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জ পত্রিকাগুলোর বিপনণ ব্যবস্থা। বিপনণের ক্ষেত্রেও সংবাদপত্রে বড় ধরনের সংকট দেখা দিয়েছে। মানুষ এখন ঘরবন্দি, করোনার ভীতির কারণে অনেকেই বাড়িতে পত্রিকা রাখা বন্ধ করে দিয়েছেন। অফিসগুলোও বন্ধ, সেখানেও পত্রিকা যাচ্ছে না। অনেক হকারও করোনার কারণে পত্রিকা বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। এর ফলে পত্রিকার প্রচারসংখ্যায় একটা বড় ধরনের টান পড়েছে।
এছাড়াও গণমাধ্যমে সংবাদকর্মী যারা, তাদেরর অনেকেই সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে ঝুঁকির মধ্যে পড়ছেন। এ পর্যন্ত গণমাধ্যমের অন্তত ৪ জন কর্মী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই পেশাগত ঝুঁকির জন্য তাদের কোনো প্রণোদনা বা কোনো সহায়তাও এখন পর্যন্ত সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়নি।
এসব কারণেই সংবাদপত্র শিল্প এখন বড় সংকটের মুখে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য করণীয় কি হবে, সেটা নিয়েই ভাবছেন সংবাদপত্র শিল্পের মালিক এবং উদ্যোক্তোরা।