রাজধানীতে হঠাৎ করে ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে গেছে। চলতি আগস্ট মাসে রাজধানীতে অন্তত ডজনখানেক ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ সব ঘটনায় অনেকজন হতাহত হয়েছেন।
এসব ঘটনার মধ্যে ৩০ আগস্ট রোববার বিকেলে রাজধানীর ওয়ারী বড়গ্রাম এলাকায় ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে মুন্না (১৭) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় তার মামাতো ভাই শাহীন আলম (১৭) গুরুতর আহত হয় ।
আহতদের স্বজন শাওন আহমেদ জানান, দুপুরে মুন্না ও শাহীন মিলে মোটরসাইকেল করে ঘুরতে বের হন। বিকেলে বনগ্রাম এলাকায় গেলে সেখানে কয়েকজন ছিনতাইকারী তাদেরকে ছুরিকাঘাত করে মোটরসাইকেল ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে আহতাবস্থায় পথচারীরা তাদেরকে উদ্ধার করে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে ন্যাশনাল হাসপাতাল থেকে তাদেরকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মুন্নাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত মুন্নার বাবা মনিরুল ইসলাম জানান, মুন্না বাসের হেলপার হিসেবে কাজ করতো এবং শাহীন ওয়ার্কশপে কাজ করে। বিকেলে ওরা দু’জন মোটরসাইকেল নিয়ে বের হয়। এরপর লোক মারফত শুনতে পাই ছিনতাইকারীরা মুন্না ও শাহীনকে ছুরি মেরেছে।
এদিকে একইদিন দুপুরে দিকে লালবাগ কেল্লার মোড়ে বাপ্পী, সাগর ও আবেদ এই তিন বন্ধুকে ৫/৬ জন ছিনতাইকারী ছুরিকাঘাত করে তাদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরে তাদেরকে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া জানান, রাজধানীতে হঠাৎ করে ছিনতাইকারীদের উৎপাত বেড়ে গেছে। চলতি মাসে প্রায় ১০ থেকে ১২টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ও মারধরে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অনেক হতাহত হয়ে ঢামেক হাসপাতালে এসেছেন।
এদিকে দীর্ঘদিন পর হঠাৎ করে রাজধানীর আন্ডারওয়ার্ল্ডও সক্রিয় হয়ে উঠার খবর প্রকাশ হয়েছে। পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে একঝাঁক স্থানীয় চাঁদাবাজ নেমে পড়েছে মাঠে। নিজেদের মধ্যে হানাহানির কৌশল বদল করে এলাকা ভাগ করে নিয়েছে এই সন্ত্রাসীরা। গত দেড় মাসে এমন ২০ জন স্থানীয় চাঁদাবাজকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরা দেশে-বিদেশে পালিয়ে থাকা শীর্ষ সন্ত্রাসীদের নামে চাঁদাবাজি করছিল। এমনকি নিজের দলে কাজ করতে রাজি না হওয়ায় খিলগাঁওয়ে স্থানীয় এক চাঁদাবাজকে হত্যাও করা হয়েছে। হঠাত্ করে শীর্ষ সন্ত্রাসীদের এই বেপরোয়া আচরণ ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও। নেপথ্য কারণ খুঁজতে মাঠে নেমেছে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সন্ত্রাসী যত বড়ই হোক, তাতে কিছুই যায়-আসে না। আমরাও সক্রিয় আছি। তারা মাথাচাড়া দেওয়ার আগে আমরা এদের নির্মূল করব। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।