গণতন্ত্রপন্থীদের বিক্ষোভ কর্মসূচি ঠেকাতে কড়া হুমকি দিল মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
শুক্রবার দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এমআরটিভি নিউজ চ্যানেলে প্রচারিত এক ঘোষণায় বলা হয়, সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে গেলে মাথা ও পিঠে গুলি করা হতে পারে।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, আগের জঘন্য মৃত্যুগুলোর ট্র্যাজেডি থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত। বিক্ষোভে গেলে আপনি মাথা ও পিঠে গুলি লাগার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এছাড়া সশস্ত্র বাহিনী দিবস ঘিরে জান্তাবিরোধী যেকোনও বিক্ষোভ মোকাবিলায় বদ্ধপরিকর বলে জানিয়েছে দেশটির সামরিক সরকার।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের রাস্তায় প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভ করছে দেশটির গণতন্ত্রকামী জনতা। ইতোমধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে বহুমানুষ।
এমন হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে জান্তা সরকার বলছে, তারা জনগণকে সুরক্ষা ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছে।
এদিকে মৃত্যুকে উপেক্ষা করেই নিয়মিত রাস্তা নামছে বিক্ষোভকারীরা। শনিবার বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়াসহ বিভিন্ন শহরে আটকদের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে।
এদিন গুলি করে অন্তত ১৬ বিক্ষোভকারীকে হত্যা করেছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে বার্তা সংস্থা এএফপি এমন খবর দিয়েছে।
এ ঘটনার পর জান্তাবিরোধী গোষ্ঠী বিআরপিএইচের মুখপাত্র ডা. সাসা বলেন, আজকের দিনটি সশস্ত্র বাহিনীর জন্য লজ্জাজনক। তিন শতাধিক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যার পর সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালন করছেন জেনারেলরা।
শুক্রবারও বিক্ষোভ হয়েছে দেশটিতে। এদিন মান্দালয়, সাগাইং অঞ্চল, কারেন ও চিন রাজ্যে রাস্তায় নেমেছে বিক্ষোভকারীরা। এসময় নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত চারজন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় মায়েইক শহরে শুক্রবার বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী।
তিনি বলেন, দুইজনকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নিরাপত্তাকর্মীদের বাঁধায় আমরা মরদেহ আনতে পারিনি।
অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারসের তথ্য মতে, মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত অন্তত ৩২০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অন্তত ২৫ শতাংশেরই মাথায় গুলি লেগেছে।