ইউরোপ থেকে বাংলাদেশগামী সব ফ্লাইট নিষিদ্ধ করেছে বাংলাদেশ সরকার। একই সঙ্গে সব দেশের জন্য অন-অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ নিষেধাজ্ঞা আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত থাকবে।
শনিবার রাত পৌনে ৯টায় যুগান্তরকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন।
পরে রাত সাড়ে ৯টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এ পরিস্থিতিতে বিদেশ থেকে যেন এই ভাইরাসটি এসে আমাদের দেশে সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে সে জন্য আমরা কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই সিদ্ধান্ত অন্যান্য দেশও নিয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত, সৌদি আরব, কাতার, কুয়েত কিংবা অন্যান্য দেশ- এ সমস্ত দেশগুলো অন্য দেশের যাত্রীদের আসা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা সে জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে আমরা নিজেদের তাগিদে যুক্তরাজ্য ছাড়া ইউরোপের সব দেশসহ যেসব এলাকায় বেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সে সব দেশের যাত্রীদের আমাদের দেশে আসা বন্ধ করে দিয়েছি। আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে। আমরা এই সময়ে পর্যবেক্ষণ করব। এবং এই সিদ্ধান্ত রোববার মধ্যরাত ১২টা ১ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যে সমস্ত দেশ বাংলাদেশ থেকে তাদের দেশে যাত্রা বন্ধ করে দিয়েছে- যেমন ভারতে আমাদের দেশ থেকে যাতায়াত বন্ধ। তেমনিভাবে আমরাও বন্ধ করে দেব। এবং এটিও স্বল্পকালীন সময়ের জন্যে। পাশাপাশি দেশের সব স্থলবন্দর বন্ধ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা অনেকগুলো দেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসা দিয়ে থাকি। আমরা আগামী দুই সপ্তাহের জন্য সব দেশের অন-অ্যারাইভাল ভিসা স্থগিত করব।
মন্ত্রী বলেন, অস্বাভাবিকভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত দেশগুলো থেকে যারা আসবেন তাদের অবশ্যই দুই সপ্তাহ কোয়ারেন্টাইনের সম্মুখিন হতে হবে।আমরা আমাদের সবগুলো সিদ্ধান্ত ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দূতাবাসকে জানিয়েছি এবং প্রক্রিয়া চলছে।
তিনি বলেন, আমরা দেশবাসীকে আশ্বস্থ করতে চাই- বর্তমান সরকার জনগণের মঙ্গলের জন্য। জনগণ যাতে কোনো রকমের ঝুঁকির সম্মুখিন না হয়, সে জন্য আমাদের মুজিববর্ষের মতো বড় অনুষ্ঠানের আকার ইঙ্গিত অনেক পরিবর্তন করেছি।
এদিকে শনিবার সকালে ইতালি থেকে ১৪২ বাংলাদেশি দেশে ফেরেন। পরে তাদেরকে রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে অস্থায়ী কোয়ারেন্টাইনে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তারা সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এ সময় বাইরে থেকে তাদের স্বজনরাও বিক্ষোভে যোগ দেন।
এ পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ইতালিফেরতদের প্রবেশাধিকার নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপত্তায় শনিবার সন্ধ্যায় সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর)।