করোনার প্রভাবে দেশব্যাপী নানান সতকর্তা মধ্যে কমেছে ছাপানো পত্রিকার বিক্রি। মঙ্গলবার সংবাদপত্রের বিক্রি গত ৮ মার্চের আগের তুলনায় ৬০ শতাংশ কমেছে বলে জানিয়েছে হকার্স ইউনিয়ন। এ তথ্যের সত্যতা মিলেছে হকারদের সাথে কথা বলেও।
সূত্র মতে, গত ১৫ দিন ধরে সংবাদপত্রের চাহিদা একটু একটু করে কমছে। অন্যদিকে রাজধানীর বাইরের বেশ কিছু পত্রিকা ঘোষণা দিয়েই ছাপানো বন্ধ করে দিয়েছে।
রাজধানীবাসী অনেকেই বলছেন, তারা এই পরিস্থিতিতে ছাপানো সংবাদপত্রের বদলে ইন্টারনেট সংবাদপত্রের উপরই নির্ভর করছেন।
বিশ্বে মহামারী আকার ধারণ করা কোভিড-১৯ রোগী গত ৮ মার্চ প্রথম বাংলাদেশে ধরা পড়ে। তারপর থেকে সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষের পারস্পরিক সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা শুরু হয়।
সংক্রমণ এড়াতে নগদ টাকা, মোবাইল হ্যান্ডসেট, ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে গণভাবে ব্যবহৃত হেলমেট, পত্রিকা ধরতে এখন সতর্কতা অবলম্বন করছে মানুষ।
ঢাকা সংবাদপত্র হকার্স বহুমুখী সমবায় সমিতির মহাব্যবস্থাপক মোবারক হোসেন টুটুল গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হওয়ার পর থেকে একটু একটু করে কমতে শুরু করে সংবাদপত্রের গ্রাহক। সর্বশেষ গত ৩/৪ দিনে বেশি পরিমাণে কমেছে। বলতে গেলে গত ১৫ দিনে ঢাকায় পত্রিকার বিক্রি ৫০ শতাংশ কমে গেছে।
ঢাকায় ৬৩টি কেন্দ্র থেকে প্রতিদিন বিতরণ করা হয় সংবাদপত্র। প্রায় ৫০ হাজার মানুষ দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন এলাকায় পত্রিকা বিতরণের কাজে যুক্ত বলে হকার্স ইউনিয়ন জানিয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সর্বমোট পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এ ভাইরাসে আক্রান্ত বলে নতুন কোনো রোগী শনাক্ত হয়নি।
বুধবার সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা অনলাইন ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, সকালে ৬৫ বছর বয়সী ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়। তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এক রোগীর আত্মীয় ছিলেন।
মীরজাদী সেব্রিনা জানান, মারা যাওয়া ব্যক্তি গত ১৮ মার্চ আক্রান্ত হন। এরপর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওই ব্যক্তির অবস্থার অবনতি হলে গত ২১ মার্চ তাঁকে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতাল এ নিয়ে আসা হয়। আজ সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
আইইডিসিআর পরিচালক বলেন, মারা যাওয়া ব্যক্তির ডায়াবেটিস ছিল। হাইপারটেনশনও ছিল।
মীরজাদী জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে দুজন বাড়ি ফিরেছেন। এ নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে মোট সাতজন সুস্থ হয়েছেন।
মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ২৪ ঘণ্টায় ৮২ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। এর মধ্যে কারও শরীরে ভাইরাস শনাক্ত হয়নি। আজ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ৩৯। প্রাতিষ্ঠানিক আইসোলেশনে ৫৭ জন।