শেরপুরের শ্রীবরদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশ ও বিজিবির ৪ সদস্য আহত হয়েছেন।
বুধবার (৪ আগস্ট ) দুপুরে উপজেলার ঝগড়ারচর বাজারে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে ওই বাজারে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন জানায়, করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে চলমান লকডাউন বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শ্রীবরদীর ঝগড়ারচর বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় একটি তৈরি পোশাকের দোকানসহ কয়েকটি দোকান লকডাউনের বিধি লঙ্ঘন করায় তাদের জরিমানা করা হয়।
এতে স্থানীয় কতিপয় ব্যবসায়ী একটি সংঘবদ্ধ চক্র পরিকল্পিতভাবে মাইকিং করে লোক জড়ো করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী হামলা প্রতিহত করতে গেলে উভয়ের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
এক পর্যায়ে হামলাকারীরা ইট-পাটকেল ছুড়লে ইটের আঘাতে আহত হন বিজিবি ও পুলিশের ৪ সদস্য। এসময় ভাঙচুর করা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি গাড়ির গ্লাস।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা আক্তার জানিয়েছেন, এ ঘটনায় হামলাকারীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আর শ্রীবরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিপ্লব কুমার বিশ্বাস টেলিফোনে জানান, ওই ঘটনায় শ্রীবরদী থানায় একটি মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।
এদিকে দুপরে উপজেলার কামারেরচর ইউনিয়নের সাহাব্দীরচর দশানীপাড়া এলাকা ভ্রাম্যমাণ আদালতের আরেকটি টিম একটি গুড়ের কারখানায় অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযানে ভেজাল গুড় তৈরির অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে তিন মাস করে কারাদণ্ড ও দেড় লাখ টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক মাস করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্তরা হলেন: স্থানীয় মো. হাতেম আলীর ছেলে মো. সাজল (৪০) ও মো. ঈমান আলীর ছেলে মো. আব্বাস উদ্দিন (৪৪)। পরে তাদের সাজা পরোয়ানামূলে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ ও ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্তরা দুটি কারখানায় দীর্ঘদিন থেকে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আখের রস ছাড়া শুধু চিনি, ময়দা, ডালডা, চিটাগুড় ও কেমিকেল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি ও বাজারজাত করে আসছিলেন। পরে গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইয়ের গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ রহমানের নেতৃত্বে বুধবার দুপুরে ওই দুটি কারখানায় অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় ভেজাল গুড় তৈরি করে বাজারজাত করার দায়ে সাজলকে তিন মাসের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের জেল এবং আব্বাস উদ্দিনকে তিন মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাসের জেল প্রদান করা হয়। সেইসাথে ভেজাল গুড় ও কেমিকেল ধ্বংস করা হয়।
তবে সাজাপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তি জরিমানার টাকা পরিশোধ করেননি। বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ রহমান বলেন, জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।