কথিত বন্দুকযুদ্ধে এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর থানার ওসিসহ সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নিহত ব্যক্তির স্ত্রী শারমিন আক্তার গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার কৌশিক আহমেদের আদালতে মামলাটি করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে হাটহাজারী সার্কেলকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবদুল্লাহ, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) ওবাইদুল ইসলাম, এসআই মো. শাহাদাত হোসেন, মো. রাশেদুল হাসান ও প্রবীণ দেব, এএসআই কল্পরঞ্জন চাকমা এবং ওই গ্রামের আবদুল মান্নান ওরফে ‘কসাই’ মান্নান।
নিহত ব্যক্তির নাম হেলাল উদ্দিন। তিনি পশ্চিম ভুজপুর এলাকায় জাফর আলমের ছেলে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী শারমিনের অভিযোগ, গত ২৪ মে রাতে তাঁর স্বামীকে ক্রসফায়ারে হত্যা করে পুলিশ।
মামলার বিবরণে বলা হয়, চলতি বছরের ২৪ মে রাতে বাদীর স্বামী মো. হেলাল উদ্দিনকে ধর্ষণ মামলার আসামি দেখিয়ে বাড়ি থেকে পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়। মামলার ৭ নম্বর আসামি আবদুল মান্নানের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে পুলিশ ধর্ষণ মামলা সাজিয়ে হেলালকে আটক দেখায়। আবদুল মান্নানের সঙ্গে হেলালের আর্থিক বিরোধ ছিল। ঘটনার দিন গভীর রাতে হেলালকে নিয়ে অন্য আসামিদের সাজানো গ্রেপ্তারের অভিযানে নামে পুলিশ। এরপর ওসিসহ ছয় পুলিশ সদস্য হেলালকে ক্রসফায়ারে হত্যা করেন।
শারমিন আকতার এ বিষয়ে থানায় মামলা দিতে গেলে ওসি ক্ষুব্ধ হন এবং তাঁকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখান।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, মামলার বাদীর স্বামী তালিকাভুক্ত ডাকাত ও ধর্ষণকারী। এ ছাড়া তিনি চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি। তাঁর বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ রয়েছে। এখন বাদী পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনে বিব্রত করার অপচেষ্টা করছেন।
শারমিন আকতার বলেন, ‘আমার স্বামী ধর্ষণ মামলায় জড়িত ছিলেন না। আমার স্বামীকে মামলার আসামি “কসাই” আবদুল মান্নানের সহায়তায় পুলিশ ক্রসফায়ারে হত্যা করেছে। অথচ আমার স্বামীর নামে থানায় কোনো মামলা নেই। এলাকার লোকজন তা একবাক্যে স্বীকার করবে। অর্থের কাছে বিক্রি হয়ে পুলিশই আমার স্বামীর হত্যাকারী। আমি ওই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।’
মামলার আইনজীবী দেওয়ান নজরুল বলেন, ক্রসফায়ারের অভিযোগ এনে ওসিসহ সাত আসামির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মামলা নম্বর-১১১। মামলায় বিচারক বিষয়টি আমলে নিয়ে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।