ময়মনসিংহ মহানগরীর যুবলিঘাট কোয়ার্টার এলাকার বাসিন্দা মরহুম নজরুল ইসলামের স্ত্রী রেহেনা ইসলাম (৫৬) টিকা নেওয়ার জন্য চলতি বছরের শুরুতে সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করেছিলেন। কিন্তু এরপর তিনি আর করোনার টিকা নেননি। স্বজনরা জোর করায় করোনার টিকা নিতে রাজি হন তিনি। মঙ্গলবার (২৮ জুলাই) রাতে ভাতিজা মেহেদী হাসান নোমান সুরক্ষা অ্যাপে ঢুকে টিকা কার্ড নামাতে চান। এসময় অ্যাপে দেখেন কার্ডের স্ট্যাটাসে তার ফুফু রেহানা ইসলামের টিকার দুটি ডোজ দেওয়া হয়েছে এবং সনদপত্রও প্রস্তুত।
টিকা না নিয়েও টিকা দেওয়া সম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি সনদপত্র প্রস্তুত হওয়ার ঘটনায় রেহানা ইসলাম বিস্মিত। ঘটনাটাকে এক ধরনের জালিয়াতি দাবি করেছেন তিনি।
তিনি বলেন, দেশে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হওয়ার পর আমি টিকা দিতে রাজি হইনি, নিবন্ধন করারও ইচ্ছা ছিল না। পরে পরিবারের সদস্যদের পীড়াপীড়িতে মেয়ের জামাই রাসেল আমার জাতীয় পরিচয়পত্র নিয়ে নিবন্ধন করে দেয়। কিন্তু এরপরও আমি টিকা নেইনি। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবারের সদস্যরা আবারও টিকা নেওয়ার জন্য জোর করতে থাকেন। পরে ভাতিজা মেহেদী হাসান নোমান সরক্ষা অ্যাপে ঢুকে দেখতে পায় আমার টিকার দুটি ডোজই দেওয়া হয়ে গেছে। আমার টিকা সম্পন্ন হওয়ার সার্টিফিকেটও প্রস্তুত।
কিন্তু কীভাবে আমার নিবন্ধন করা টিকা না দেওয়ার পরেও দেওয়া হলো তা বুঝতে পারছি না।
রেহানা ইসলামের ভাতিজা ব্যাংক কর্মকর্তা মেহেদী হাসান নোমান বলেন, টিকার নিবন্ধনের পর ফুফুর ময়মনসিংহ মেডিক্যালে টিকা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তিনি টিকা নেননি। এ অবস্থায় টিকা না নিয়েও দুই ডোজ সম্পন্ন হওয়া এবং সনদপত্র প্রস্তুত হওয়ার বিষয়টিকে আমরা জালিয়াতি ছাড়া আর কিছুই বলতে পারছি না। এ ধরনের ঘটনা আরও আছে কিনা তা খতিয়ে দেখার দাবি জানান নোমান।
এদিকে টিকা কার্যক্রম সম্পন্ন করার কাজে নিয়োজিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রেদাউর রহমান বলেন, ময়মনসিংহে এ ধরনের ঘটনা আরও সাত থেকে আটটি ঘটেছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এটা সুরক্ষা অ্যাপের কোনও টেকনিক্যাল সমস্যা বলে মনে হচ্ছে।
তবে তিনি জানান, ভুক্তভোগী রেহানা ইসলাম ইচ্ছা করলেই নিবন্ধন কার্ড নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে ম্যানুয়ালি টিকা নিতে পারবেন। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের সহযোগিতায় তার টিকা গ্রহণের সনদপত্রও দেওয়া যাবে।
এদিকে এ ধরনের ঘটনাকে কোনও জালিয়াতি নয় বলে দাবি করেছেন ময়মনসিংহ স্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক ডা. মো. শাহ আলম।
তিনি বলেন, এ ধরনের সমস্যার কথা শুনেছি। এর আগেও দুই জনের এমন সমস্যা হয়েছে বলে অভিযোগ এসেছে। এটা সফটওয়্যারের সমস্যা। তবে অভিযোগ পেলে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে এবং যার সমস্যা হয়েছে তিনি টিকা নিতে পারবেন বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।